গুলশানের ফ্ল্যাট নিয়ে টিউলিপসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
ঢাকার গুলশানে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের একটি ফ্ল্যাট অবৈধ সুবিধা নিয়ে দখলের অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। টিউলিপ শেখ হাসিনার ভাগনি এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’।
আজ মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুদকের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম রাজধানীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন জানান, মামলায় আসামি করা হয়েছে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রাজউকের সাবেক সহকারী আইন উপদেষ্টা শাহ মো. খসরুজ্জামান ও সরদার মোশারফ হোসেনকে। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা একসাথে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো অর্থ পরিশোধ না করেই গুলশান-২–এর একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট (ফ্ল্যাট নং বি/২০১, বাড়ি নং ৫এ ও ৫বি – নতুন ঠিকানা ১১৩, ১১বি, রোড নং ৭১) দখল করেন এবং পরে সেটি রেজিস্ট্রি করে নেন।
দুদকের ভাষ্য, সরকার থেকে ইজারা নেওয়া জমিতে জালিয়াতির মাধ্যমে নির্মিত ভবন থেকেই এই ফ্ল্যাটটি দখল করা হয়।
এই ঘটনার তদন্তে দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়েছিল। দলে ছিলেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া, মুবাশ্বিরা আতিয়া তমা, এস এম রাশেদুল হাসান, এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর, মো. মনিরুল ইসলাম ও উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এর আগে, গত ১০ মার্চ পূর্বাচলে ৬০ কাঠা জমির প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এরপর আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
গতকাল (সোমবার) লন্ডনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিউলিপ বলেন, বাংলাদেশের কোনো কর্তৃপক্ষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি, বরং পুরো সময় তাকে ঘিরে "মিডিয়া ট্রায়াল" চালানো হয়েছে। তাঁর আইনজীবীরা কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠালেও কোনো উত্তর মেলেনি। টিউলিপ আরও বলেন, “আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝতে পারবেন, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণাকে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা সম্পূর্ণভাবে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা। কোনো প্রমাণ নেই যে আমি কোনো অন্যায় করেছি।”
গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তাঁর শাসনামলের নানা দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বড় পরিসরে তদন্ত শুরু করে দুদক। সেই তদন্তেই টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে আসে।
উল্লেখ্য, টিউলিপ যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের সংসদ সদস্য। বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি ‘সিটি মিনিস্টার’ পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
0 comments: