"মানুষ বলছে, আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকুন" — স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে এবং আরও ভালো হবে। তিনি জানান, "সাধারণ মানুষ নিজেরাই বলছে আইনশৃঙ্খলা এখন আগের চেয়ে ভালো। আমি রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে শুনি, তারা বলছে—আপনারা আরও পাঁচ বছর থাকেন।"
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাহাঙ্গীর আলম।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, "আমাদের থানার কিছু অস্ত্র হারিয়েছিলাম। এখনো সব উদ্ধার হয়নি, তবে চেষ্টা চলছে। সব উদ্ধার হলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।"
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের কয়েকটি বিভাগীয় শহরে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, "ঘটনা ঘটতেই পারে। কিন্তু আমরা প্রতিকার নিয়েছি কি না, সেটাই দেখার বিষয়। যারা অপরাধ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ভবিষ্যতেও কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।"
শান্তিগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা অবনতির বিষয়ে তিনি বলেন, "এখানে সবাইকে সচেতন হতে হবে। বলতে হবে—ভাই, তোমাদের জন্য আমাদের থানার বদনাম হচ্ছে। কোথাও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হলে, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
পরে বিকেলে উপদেষ্টা সুনামগঞ্জ হাওরে বোরো ধান কাটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সদর উপজেলার দেখার হাওরের গোবিন্দপুর এলাকায় তিনি একজন কৃষকের প্রতীকী ধান কাটেন, যা দিয়ে মৌসুমি ধান কাটার সূচনা হয়।
সেখানে তিনি বলেন, "কৃষকের ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা হবে। সরকার সরাসরি ধান কিনবে। যদি কোথাও সিন্ডিকেটের চেষ্টা হয়, সেটা আমরা ঠেকাব।"
এরপর তিনি কৃষকদের সঙ্গে ফসল, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ, ধানের দামসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন—কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. জাকির হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী, পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মুশফিকুর রহমান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহমেদ এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম প্রমুখ।
এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় মোট ২ লাখ ২৩ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এবার ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন।
0 comments: