Friday, April 18, 2025

যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ও স্নাতকের ভিসা বাতিল

যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ও স্নাতকের ভিসা বাতিল

 


বড় পরিসরে অভিবাসনবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী শত শত বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কেন এমনটা করা হয়েছে, তা অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরই জানা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্রদের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষাথীদের তথ্যভান্ডার স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেমে (এসইভিআইএস) দেশটির ১৩০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ও সম্প্রতি স্নাতক সম্পন্নকারীদের ভিসা বা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বৈধতা বাতিল করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪০টি অঙ্গরাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা ও দেশটিতে থাকার বৈধতা বাতিলের খবর সিএনএনকে নিশ্চিত করেছে।

মিডল টেনেসি স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জিমি হার্ট জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ছয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় এ পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কোনো কারণ জানে না। শুধু জানে, শিক্ষার্থীদের পর্যবেক্ষণকারী ফেডারেল তথ্যভান্ডারে পরিবর্তন আনা হয়েছে।’

একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার তাদের এ পদক্ষেপের ক্ষেত্রে কোনো কারণ জানায়নি। শুধু অল্প কিছু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, কেন তাদের শিক্ষার্থীদের ভিসা বা কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার এসইভিআইএসের অ্যাকাউন্ট বাতিল হয়েছে, তা তারা জানে।

ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র এরিক হাওয়াল্ড বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ অজ্ঞাত অপরাধের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি। অভিযোগের ধরন সম্পর্কেও কিছু জানানো হয়নি।

যাঁদের ভিসা বাতিল হয়েছে, তাঁদের অবিলম্বে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে কি না, নাকি তাঁরা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবেন—তা এখনো স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীবিরোধী অভিযানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তার মতো গুরুতর অভিযোগ থেকে শুরু করে অনেক বছরের পুরোনো ছোটখাটো অভিযোগে তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে।

কেন অনেক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হলো, তার নির্দিষ্ট কোনো কারণ মার্কিন কর্মকর্তারা জানাননি। তবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বারবার বলেছেন, বিক্ষোভে অংশ নেওয়াসহ কিছু আচরণ সহ্য করা হবে না।

মার্কো রুবিও বলেন, ‘তাঁরা এখানে ক্লাস করতে এসেছেন। আন্দোলন করতে এখানে আসেননি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত করে।’

লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় সিএনএনকে বলেছে, তাদের ১২ জন বর্তমান বা সদ্য স্নাতক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হুলিও ফ্রেঙ্ক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাতিলের নোটিশে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করায় তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।’

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা

শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল বন্ধ এবং বাতিল হওয়া ভিসা পুনর্বহাল চেয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফেডারেল আদালতে নতুন একটি মামলা হয়েছে।

আটলান্টার নর্দার্ন জর্জিয়া আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে ভারত, চীন, কলম্বিয়া, মেক্সিকো এবং জাপানের ১৩৩ বিদেশি শিক্ষার্থীর ঘটনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মামলার এক আইনজীবী সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

তবে শিক্ষার্থীরা যাতে বিপদে না পড়েন, সে জন্য ওই মামলায় তাঁদের ছদ্মনাম ব্যবহার করা হয়েছে। মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের তিন কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম এবং অভিবাসন ও শুল্ক বাস্তবায়ন সংস্থার (আইসিই) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক টড লায়ন্স।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আইসিই বেআইনিভাবে শিক্ষার্থীদের আইনি বৈধতা বাতিল করেছে, যা তাদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করা এবং সেখানে কর্মসংস্থানের সক্ষমতা কেড়ে নিয়েছে। তাঁদের আটক, গ্রেপ্তার ও বিতাড়নের ঝুঁকিতে ফেলেছে।

বিশ্বে আগের শত্রুরা পরবর্তীতে মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে  প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব।

বিশ্বে আগের শত্রুরা পরবর্তীতে মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব।

 


অন্তর্বর্তী সরকার প্রো-বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওঠা প্রশ্নের ব্যাখ্যায় আজ শুক্রবার আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা বলেন।

বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড শতাব্দী ধরে অসংখ্য যুদ্ধ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হাত মিলিয়েছে। একই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জাপানে বোমাবর্ষণ করেছিল, কিন্তু পরে তারা মিত্রে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কি পাকিস্তানপন্থী হয়ে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। এ ধরনের প্রশ্ন আমাদের মোটেও অবাক করেনি। এমন কিছু মানুষ সব সময়ই থাকবে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীন পরিচয়ে খুব কমই বিশ্বাস করবে।’

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের জবাব স্পষ্ট ছিল। অতীতে দেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যা–ই ঘটুক না কেন, এখন থেকে এটি বাংলাদেশপন্থী নীতি হবে, যা আমাদের নিজস্ব স্বার্থে পরিচালিত হবে।

এক প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে অন্য প্রতিবেশী থেকে দূরে সরে যাওয়া একটি স্বাধীন জাতির পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, সফররত পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচকে দুই দেশের মধ্যকার অমীমাংসিত বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার তার কথাগুলোকে কাজে রূপ দিতে ২৪ ঘণ্টার কম সময় নিয়েছে। একই সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মতি জানিয়েছে।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী একটি আবেগঘন বিষয় হলো ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার জন্য দেশটির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি। এমনকি পাকিস্তানের সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই বিশ্বাস করতেন, ক্ষমা চাওয়া- সদিচ্ছা ও উদারতার একটি কাজ হবে। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর ও সামরিক আমলাতন্ত্র সর্বদা এই ধরনের কথার বিরোধিতা করেছে। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো ক্ষমা চাওয়া হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ সম্পদের বিভাজনের বিষয়টির ওপরও জোর দিয়েছে, যা অতীতের শাসকদের কাছে ভুলে যাওয়া একটি বিষয় ছিল। অতীতে শাসকেরা এটি আলোচনার চেয়ে বিচ্ছিন্নতা পছন্দ করতেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের একটি অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন (৪৩২ কোটি) মার্কিন ডলার। অভ্যন্তরীণ মূলধন সৃষ্টি, বৈদেশিক ঋণ নিষ্পত্তি এবং বৈদেশিক আর্থিক সম্পদ ধরে রাখার অনুমিত হিসাবের ভিত্তিতে এটি নির্ধারণ করা হয়।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের আরও প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করেছে, যা ১৯৭০ সালের নভেম্বরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ/সংস্থা অনুদান দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের লাহোর শাখায় স্থানান্তরিত হওয়ার আগে এই অর্থ ঢাকায় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অফিসে পড়ে ছিল।

আজাদ মজুমদার তার পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন আরেকটি বিষয় ছিল, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করেছিল। অতীতে পাকিস্তান তাদের লোকদের মাত্র এক লাখ ২৫ হাজার জন ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ১৪টি জেলার ৭৯টি শিবিরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার জন ছিল।

তিনি বলেন, এই বিষয়গুলোই দুই দেশের মধ্যে একটি সুস্থ ও ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম বিকল্প হলো আলোচনা এবং অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক এটাই করার চেষ্টা করছে। অনেক বছর পর বাংলাদেশ পাকিস্তানকে আলোচনায় এনেছে এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পাশাপাশি যথাযথভাবে বিষয়গুলো উত্থাপন করেছে।

উপ-প্রেস সচিব স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ডিসেম্বরে মিশরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বালুচের সঙ্গে বৈঠক করার সময় তিনি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সুবিধার্থে অতীতের ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য সম্ভবত এখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এক সঙ্গে কাজ করা ও এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে। 

সাভারের ডিবি পরিচয়ে অপহরণের সময় একজন গ্রেপ্তার

সাভারের ডিবি পরিচয়ে অপহরণের সময় একজন গ্রেপ্তার

 


আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি 

সাভারের ও আশুলিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের সময় সাদ্দাম হোসেন রাজিব (৪১) নামের এক যুবককে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পরে তাকে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।


বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের বাইপাইল বসুন্ধরা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। আটককৃত অপহরণকারী সাদ্দাম হোসেন রাজিব টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার সলিমাবাদ এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি আশুলিয়ার মধ্য গাজিরচট মাটির মসজিদ এলাকায় থাকতেন।


অপরদিকে ভুক্তভোগীর নাম নবাব আলী। তিনি বাইপাইল বসুন্ধরা এলাকায় স্টকলটের ব্যবসা করে আসছিলেন। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুর ১২টার দিকে একটি হায়েস গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নবাব আলীকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা কৌশলে পালিয়ে যেতে থাকে। তবে অপহরণকারীদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন রাজীব নামে একজনকে হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় জনতা। খবর পেয়ে আশুলিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়।


ভুক্তভোগী নবাব আলী বলেন, দুপুরে মোটরসাইকেলে করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার সময় একটি হায়েস গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক আমাকে থামতে বলে। গাড়িতে ডিবি পুলিশের স্টিকার থাকায় আমি না দাড়িয়ে দ্রুত সামনে যাওয়ার চেষ্টা করি। তবে রাস্তায় কাঁদা থাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে আমি পড়ে যাই। এ সময় গাড়ি থেকে অপহরণকারীরা নেমে বলতে থাকে আমার কাছে নাকি অস্ত্র আছে। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার সময় একজনকে ধরে ফেলে এলাকাবাসী।


আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীকে তুলে নেয়ার সময় আটককৃত যুবককে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Thursday, April 17, 2025

আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দুদকের অভিযান চালানো হয়েছে।

আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দুদকের অভিযান চালানো হয়েছে।



 আনোয়ার হোসেন আন্নু বিশেষ প্রতিনিধি

অনিয়ম ও দুর্নীতির অনুসন্ধানে আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দুদকের ৩ সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।

 এ সময় দুদক কর্মকর্তারা আশুলিয়া সাব-রেজিস্ট্রোর অফিসের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালিয়ে আবাসিক জমিতে ভবন থাকা সত্ত্বেও ভবন না দেখিয়ে দলিল রেজিস্ট্রি করা, অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়মের তথ্য পান। এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-২ এর সহকারী পরিচালক ওয়াহিদ মঞ্জুর সোহাগ।


 তিনি অনুসন্ধান শেষে সাংবাদিকদের জানান, দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি ও নকল উত্তোলনসহ অন্যান্য কাজে সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি এবং ঘুষ দাবিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তারা এসব অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে। এছাড়া তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

 দয়া করে এটি একই বাংলা ভাষায় পুনর্লিখন করুন কিন্তু আধুনিক বাংলা ভাষা ব্যবহার করুন।

Tuesday, April 15, 2025

সাভারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সাভারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।




আনোয়ার হোসেন আন্নু, বিশেষ প্রতিনিধি


সাভারে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় ইয়াবা, গাঁজা, মদ এবং ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি সুইস গিয়ার চাকু জব্দসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির।

তিনি জানান, সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সাভার থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় এই বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। অভিযানে ৪ হাজার পিস ইয়াবা, ২ কেজি ৭০০ গ্রাম গাঁজা, ১ বোতল মদ এবং ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত দুটি সুইস গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মো. সুমন (২৫), ইউসুফ রহমান (২০), আনান হোসেন (২১), দীপক সূত্রধর (২৪), সুলতান কাজী (৫২) এবং মনিরা খাতুন (৪১)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংক টাউন এলাকার একটি চেকপোস্টে ‘ইতিহাস পরিবহন’-এর একটি যাত্রীবাহী বাস থামানোর সময় এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাকে ধরে ফেলে এবং তার দেহ তল্লাশি করে ৪ হাজার পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে।

এছাড়া বিকেলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে তিন ছিনতাইকারীকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে সিলভার ও কালো রঙের দুটি সুইস গিয়ার চাকু জব্দ করা হয়।

সন্ধ্যায় আমিনবাজার বড়দেশী এলাকায় মাদক বেচাকেনার গোপন খবরে অভিযান চালিয়ে ২ কেজি ৭০০ গ্রাম গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এছাড়া অন্যান্য অপরাধে আরও দুই জনকে গ্রেফতারসহ গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
পরবর্তীতে গ্রেফতারদের মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়।

পাঁচ মাসে আড়াই শতাধিক জেলেকে তুলে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

পাঁচ মাসে আড়াই শতাধিক জেলেকে তুলে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

 


নাফ নদীতে জেলেদের নতুন ভয়: পাঁচ মাসে দেড় শতাধিক অপহরণ, অভিযুক্ত আরাকান আর্মি


কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীতে মাছ ধরতে যাওয়াটা এখন জেলেদের জন্য বড় এক আতঙ্ক। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মি (AA) গত পাঁচ মাসে মাছ ধরতে যাওয়া অন্তত ১৫১ জন জেলেকে অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান তৎপরতার কারণে টেকনাফের প্রায় ৪০০ ট্রলার মালিক ও তিন হাজারের বেশি জেলে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে জেলে পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা সোমবার মধ্যরাতে শুরু হয়েছে। তবে তার আগেই আতঙ্কে মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় জেলেরা।

নাফ নদীর ৮৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গত তিন মাস ধরে আরাকান আর্মির টহল বেড়েছে। জলসীমা লঙ্ঘন করে তারা বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে ট্রলারসহ জেলেদের অপহরণ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সর্বশেষ অপহরণ: সাগর থেকে ২৩ জন নিখোঁজ

৮ এপ্রিল সেন্ট মার্টিনের উপকূলীয় এলাকা মৌলভীরশীল থেকে চারটি মাছ ধরার ট্রলার ও ২৩ জন জেলেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। এরপর থেকে টেকনাফের কোনো ট্রলার আর সাগরে নামছে না।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান জানান, গত ডিসেম্বরে মিয়ানমারের মংডু শহর দখলের পর থেকেই আরাকান আর্মির তৎপরতা বেড়েছে। এ পর্যন্ত তাদের হাতে অপহৃত ১৫১ জেলের মধ্যে ১৩৪ জনকে বিজিবির প্রচেষ্টায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি জেলেদের ফিরিয়ে আনতেও কাজ চলছে।

তিনি আরও জানান, ২৩ জন জেলে ও চারটি ট্রলার উদ্ধারে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। “দ্রুত ভালো খবর পাওয়া যাবে” বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
জেলেদের অভিজ্ঞতা ও পরিবারে আতঙ্ক

সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া কয়েকজন জেলে জানান, আরাকান আর্মি বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তেই তারা অপহরণ করছে, যাতে একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি হয়।

ট্রলার মালিকরা অভিযোগ করেছেন, আরাকান আর্মির সদস্যরা স্পিডবোটে করে বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়ছে, অস্ত্র দেখিয়ে জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি মাঝে মাঝে উদ্ধার করলেও অপহরণ থেমে নেই।

সেন্ট মার্টিন উপকূল থেকে অপহৃত ২৩ জেলের মধ্যে শাহপরীর দ্বীপের আবদুল শুক্কুরের ট্রলারে ছিলেন ৫ জন, মোহাম্মদ শাওনের ট্রলারে ৬ জন এবং আবদুল হাকিমের দুটি ট্রলারে ছিলেন ১২ জন।

তাঁরা জানিয়েছেন, অপহৃতদের কোনো খোঁজ নেই। পরিবারগুলো আতঙ্ক আর দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞা শুরু, বাড়ছে দুর্ভোগ

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহীদের দখলের পর নাফ নদীতে আরাকান আর্মি মাছ ধরা ও নৌযান চলাচলে নিজস্ব নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জেলেদের সতর্ক করা হয়েছে যেন তারা মিয়ানমারের জলসীমায় না ঢুকে পড়ে।

১৫ এপ্রিল থেকে সরকারি নিষেধাজ্ঞাও শুরু হওয়ায় মোট ১০ থেকে ১২ হাজার জেলে পরিবার এখন আরও বড় সংকটে পড়েছে। মাছ ধরতে না পারায় বাজারেও সামুদ্রিক মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

গত রোববার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও জালিয়াপাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে, শত শত ট্রলার ঘাটে নোঙর করে পড়ে আছে। জেলেরা ভাঙা জাল ঠিক করছেন, কেউ কেউ অলস সময় কাটাচ্ছেন। সেন্ট মার্টিনেও কোনো নৌকা সাগরে যাচ্ছে না।



জেলেরা বলছেন, বেঁচে থাকার চেয়ে ফিরে আসাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সাগরে নামা এখন শুধু জীবিকার জন্য নয়, জীবনের ঝুঁকিও।
আমি যদি শিষ্টাচার ভেঙে ফেলি, আপনি সহ্য করতে পারবেন না : হাসনাত আবদুল্লাহ

আমি যদি শিষ্টাচার ভেঙে ফেলি, আপনি সহ্য করতে পারবেন না : হাসনাত আবদুল্লাহ



আপসের রাজনীতি করলে আমি আর শিষ্টাচার মানব না" — হুঁশিয়ারি দিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ

আওয়ামী লীগ ইস্যুতে যাঁরা আপসের (সমঝোতার) রাজনীতি করছেন, তাঁদের সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি লেখেন,
“অতিসত্বর আওয়ামী লীগ নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করুন। না হলে আপনারা করবেন আপসের রাজনীতি, আর আমি করব শিষ্টাচার ভেঙে দেওয়া আচরণ। আমি যদি তা শুরু করি, সেটা কেউই সহ্য করতে পারবেন না। সাবধান হয়ে যান।”

হাসনাত আরও লেখেন,
“যেদিন থেকে আমাদের আওয়ামীবিরোধী অবস্থান আর আপসবিরোধিতাকে ‘শিষ্টাচারবহির্ভূত’ বলা হচ্ছে, সেদিন থেকেই আওয়ামী লীগের মিছিলের আকার বাড়ছে। যারা আপস করছেন, তারা যেন বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নেন।”
  

এই পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ আগে ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে রাজধানীর বাড্ডায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল দেখা যায়। ভিডিওটি বিভিন্নজন শেয়ার করে দাবি করেন, মিছিলে নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের একজন সাবেক স্থানীয় নেতা। এরপরই হাসনাত আবদুল্লাহর এই পোস্ট সামনে আসে।

ফেসবুক পোস্টে তিনি কাদের উদ্দেশে কথা বলেছেন, কারা আপস করছেন— এ বিষয়ে জানতে প্রথম আলো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,
“অনেকেই আপসের রাজনীতি করছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী তাঁদের নাম প্রকাশ করব। জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানে মানুষের রক্তের সঙ্গে কোনো ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা বরদাশত করা হবে না।”